২০১৪ সালে ফাইনালে গিয়েও হয়নি। জার্মানির কাছে হেরে লিওনেল মেসির স্বপ্ন ভেঙেছে। আট বছর পর আবারও সুযোগ এলো।
এটাকে সুযোগ না মেসির শেষ সুযোগ বলাই ভালো। কারণ মেসি ঘোষণা দিয়েছেন, বিশ্বকাপে তার রবিবারই ফাইনাল (শেষ) ম্যাচ তা আর্জেন্টিান জিতুক কিংবা হারুক।
তবে এই ম্যাচে মেসির সামনে অনেকগুলো রেকর্ড গড়ার সুযোগ আছে।
এক: ২০০৬ সাল থেকে ফুটবল বিশ্বকাপ খেলছেন মেসি। এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপের ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। বিশ্বকাপের সব থেকে বেশি ম্যাচ খেলার ক্ষেত্রে তিনি রয়েছেন যুগ্ম ভাবে প্রথম স্থানে। জার্মানির বিশ্বজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউজও বিশ্বকাপের ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফাইনাল হবে মেসির বিশ্বকাপের ২৬তম ম্যাচ। মাঠে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একক ভাবে শীর্ষে চলে আসবেন। মেসি হবেন বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি ম্যাচ খেলা ফুটবলার।
দুই: ২৫টি ম্যাচ মিলিয়ে বিশ্বকাপে মেসি এখনও পর্যন্ত খেলেছেন মোট ২১৯৪ মিনিট। সময়ের হিসাবে তিনি রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। শীর্ষে রয়েছেন ইতালির প্রাক্তন ফুটবল পাওলো মালদিনি। তিনি বিশ্বকাপে মোট ২২১৭ মিনিট খেলেছেন। রবিবারের ফাইনালে ২৪ মিনিট খেললে এ ক্ষেত্রেও শীর্ষে উঠে আসবেন মেসি।
তিন: বিশ্বকাপে ২৫টি ম্যাচ খেলে মেসি জয়ের স্বাদ পেয়েছেন ১৬টি ম্যাচে। এই ক্ষেত্রেও তিনি রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। কাতারে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারলে আরও একটি ব্যক্তিগত রেকর্ড স্পর্শ করার সুযোগ পাবেন তিনি। বিশ্বকাপের ১৭তম ম্যাচ জেতার সুবাদে জার্মানির প্রাক্তন ফুটবলার মিরোস্লাভ ক্লোজের সব থেকে বেশি ম্যাচ জেতার নজির স্পর্শ নজির করবেন মেসি।
চার: এখনও পর্যন্ত মেসি বিশ্বকাপে নয়টি গোল করিয়েছেন সতীর্থদের দিয়ে। ফাইনালে সতীর্থদের দিয়ে আরও দু’টি গোল করাতে পারলে ভেঙে দেবেন পেলের রেকর্ড। একটি গোলে সাহায্য করলেও পেলেকে ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। বিশ্বকাপের ম্যাচে পেলে সতীর্থদের দিয়ে ১০টি গোল করিয়েছেন। যে রেকর্ড এখনও পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে।
পাঁচ: ২০১৪ সালে দেশকে বিশ্বকাপ জেতাতে না পারলেও প্রতিযোগিতার সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছিলেন মেসি। জিতেছিলেন গোল্ডেন বল। এ বার কাতারেও গোল্ডেন বল জেতার অন্যতম দাবিদার তিনি। বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে কোনও ফুটবলারের দু’বার গোল্ডেন বল জেতার নজির নেই। অর্থাৎ, কেউ দু’টি বিশ্বকাপে সেরা ফুটবলার হতে পারেননি। মেসি কাতারে সোনার বল জিতলে এ ক্ষেত্রে তিনিই হবেন বিশ্বের সেরা ফুটবলার।
ছয়: কাতার বিশ্বকাপে মেসি এখনও পর্যন্ত করেছেন পাঁচটি গোল। সোনার বুট জেতার দৌড়ে ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে যৌথ ভাবে শীর্ষে রয়েছেন। প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারলে জিতবেন সোনার বুট। বিশ্বের সপ্তম ফুটবলার হিসাবে বিশ্বকাপে সোনার বুট এবং সোনার বল জেতার নজির গড়বেন মেসি। এখনও পর্যন্ত এই কৃতিত্ব রয়েছে ব্রাজিলের লিয়োনিদাস দ্য সিলভা, গ্যারিঞ্চা, রোনাল্ডো, ইটালির পাওলো রোসি, সালভাতোর স্কিলাচি এবং আর্জেন্টিনার প্রাক্তন ফুটবলার মারিয়ো কেম্পেস। রোনাল্দো বাদে সকলে একটি বিশ্বকাপেই দু’টি পুরস্কার জিতেছিলেন।
সাত: এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে মেসি ১১টি গোল করেছেন এবং নয়টি গোল করিয়েছেন সতীর্থদের দিয়ে। অর্থাৎ, দলের ২০টি গোলে তার অবদান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তার আগে রয়েছেন শুধু পেলে। ব্রাজিলের প্রাক্তন ফুটবলার বিশ্বকাপে ১২টি গোল করেছিলেন এবং সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছিলেন ১০ গোল। দলের মোট ২২টি গোলে তার অবদান ছিল। ফাইনালে দলের দু’টি গোলে অবদান রাখতে পারলে এ ক্ষেত্রেও পেলেকে ছুঁয়ে ফেলবেন মেসি।