পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া শহরের ব্যাংকপাড়া এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মোল্লা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে গতকাল রোববার রাতে দুই প্রবাসীসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১০১ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ ১৫১ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মোল্লা আবুল কালাম আজাদসহ মামলার পাঁচ সাক্ষী বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা শেষে গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ১০ মিনিটের দিকে বাসায় যাচ্ছিলেন। এ সময় মামলার আসামিরা ককটেল ও দেশি অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে গিয়ে মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের পথ রোধ করে খুনের উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে ককটেল নিক্ষেপ করেন। ককটেল বিস্ফোরণে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের টিনের বেড়া ও জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। এতে এক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। আসামিদের বোমা নিক্ষেপে মোল্লা আবুল কালাম আজাদ আঘাত পান। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে সাক্ষী মো. খোকন আহত হন।
আসামিদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া পৌরসভার থানাপাড়া মহল্লার মো. সামসু মিয়ার ছেলে মো. জুয়েল ও একই মহল্লার মৃত মোসলেম সরদারের ছেলে মো. নান্টু মিয়াকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। ওই দুই আসামি ছয় বছর ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন। জুয়েল সৌদি আরব থেকে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ছয় বছর ধরে সৌদি আরবে রয়েছি। অথচ আমাকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আরেক আসামি নান্টুও আমাদের সঙ্গে সৌদি আরবে আছেন।’ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ককটেল হামলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের টিনের বেড়া ও জানালার গ্লাস ভেঙে যায়।
আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি পাকা একতলা ভবন। সেখানে টিনের কোনো বেড়া নেই। জানালা লোহার তৈরি, কোনো ভাঙা কাচের জানালা দেখা যায়নি।
মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য হুমায়ুন কবিরকে। হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সময় আমি বাসায় ছিলাম।’
মামলায় করা অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদী মোল্লা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পাশে থাকা টিনের ঘর ককটেল বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি আহত হয়েছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক বলেন, মোল্লা আবুল কালাম আজাদ ও খোকন গতকাল ভোর চারটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হননি। কালামের হাতে সামান্য জখম ছিল।
মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, ‘আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করতে গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবে আছেন, এমন দুজন বিএনপি কর্মীকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এভাবে গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছিল। তবে গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপিকে দুর্বল করা যাবে না।’
মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘মামলার বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। বাদী যাঁদের আসামি করেছেন, আমরা তাঁদের নামে মামলা নিয়েছি। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।’